নাকবা ও স্বাধীনতার নতুন বাস্তবতায় ফিলিস্তিন ও মধ্যপ্রাচ্য

Daily Inqilab জামালউদ্দিন বারী

০৮ মে ২০২৪, ১২:১৫ এএম | আপডেট: ০৮ মে ২০২৪, ১২:১৫ এএম

প্রথম মহাযুদ্ধে ঔপনিবেশিক বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ পতনের কাছাকাছি চলে আসার প্রেক্ষাপটে ইহুদি ক্যাপিটালিস্টদের ডায়াসপোরার সমর্থন ও সহায়তাকে উত্তরণের একমাত্র পথ বলে মনে করেছিল বৃটিশ রাজনীতিকরা। তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড বালফোর তার বন্ধু ইহুদি কমিউনিটি লিডার রথশিল্ডের কাছে কয়েক লাইনের একটি সংক্ষিপ্ত চিঠি লিখেন। যুদ্ধোত্তর বিশ্বে ফিলিস্তিনের মাটিতে একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি সম্বলিত সেই চিঠিটি ঐতিহাসিক বালফোর ডিক্লারেশন নামে পরিচিত। পশ্চিমা মিডিয়ার তথ্য অনুসারে, প্রথম মহাযুদ্ধের সময় ফিলিস্তিনের প্রায় আটলাখ জনসংখ্যার মধ্যে ৬,৫৭০০০ আরব মুসলমান, ৮১০০০ আরব খৃষ্টান এবং ৫৯,০০০ ইহুদি। অর্থাৎ জনসংখ্যার দিক ইহুদিদের সংখ্যা ছিল শতকরা আট ভাগেরও কম। এই মাইনরিটি গ্রুপকে সেখানকার সব ভূমির দখল বুঝিয়ে দিতে সামরিক শক্তির বেপরোয়া ব্যবহারে জায়নবাদী নীতিকে পশ্চিমাদের নির্লজ্জ সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতার ইতিহাস বিংশ শতাব্দীর গণতান্ত্রিক সভ্যতার জন্য একটি চরম কলঙ্কজনক অধ্যায়। মানব সভ্যতার বিবর্তনের সাথে অনেক রক্তাক্ত যুদ্ধ-বিগ্রহ ও উত্থান-পতনের ইতিহাস আছে। এসব ইতিহাসের মূল্যায়নেও ঐতিহাসিকরা নানাভাবে নিজেদের মতামত উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু ফিলিস্তিনের ভূমিতে ইহুদিদের জায়নবাদি দখলদারিত্বের সমত্যুল্য বর্বরতার ইতিহাস মধ্যযুগ থেকে এখন পর্যন্ত নজিরবিহীন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা পুঁজিবাদি সাম্রাজ্যের মধ্যপ্রাচ্যনীতির পরিনর্তন অথবা তাদের চূড়ান্ত পতন না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার কোন সম্ভাবনা আপাতত: দেখা যাচ্ছেনা। নাইন-ইলেভেনের পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে পশ্চিমা সামরিক এজেন্ডার বাস্তবায়ন চলছে। ইরাক ও আফগানিস্তানে দখলদারিত্ব ও রিজিম চেঞ্জের পর অন্য সবগুলো দেশকে সন্ত্রস্ত ও নিরাপত্তাহীন করে তুলতে ওয়ার অন টেররের অস্ত্রের পাশাপাশি আইএস’র মত সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দেয়ার পেছনে পশ্চিমাদের ভূমিকা এখন ওপেন সিক্রেট। এতকিছুর পরও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা, জেরুজালেম ও আল আকসা পুনরুদ্ধারের প্রশ্নে মুসলমানদের মধ্যে এ ধরনের অটুট ঐক্য গড়ে উঠেছে। পূর্ব জেরুজালেম এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রশ্নে বিশ্বসম্প্রদায়ের প্রয়াস ও সমর্থনও ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়েছে। জেরুজালেম প্রশ্নে ইহুদি প্রভাব থাকলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও গত ৭৫ বছর ধরে বিশ্বসম্প্রদায়ের সাথে সহমত পোষন করেই চলেছিল। এমনকি আরব-ইসরাইল শান্তি প্রক্রিয়ায় দ্বিরাষ্ট্রকেন্দ্রিক সমাধানের নীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে গত দুই দশক ধরে দুর্বল মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় দেখা গেছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রশ্নে গত ৫ বছরে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পর্যায়ে বেশ লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ রাষ্ট্র ইতিমধ্যেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলনের প্রস্তাব গ্রহণের আগে ইসরাইলী ও মার্কিনীদের প্রবল কূটনৈতিক চাপের মুখে জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত ভোটাভোটিতে অংশগ্রহণকারী ১৭২টি দেশের মধ্যে প্রস্তাবের পক্ষে ১১৯ ভোট এবং বিপক্ষে ইসরাইল, মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রসহ ৮টি ভোট পড়ে এবং ৪৫টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত থাকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় দিক হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া। গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা ও হামাসের প্রতিরোধ শুরুর পর ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অন্তত ৫টি দেশ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রশ্নে তাদের ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতেও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বিদ্যমান আছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রশ্নে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত এক ভোটাভুটিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৪৯৮ জন সদস্য পক্ষে ভোট দেন, এর বিপক্ষে ভোট পড়েছিল ৮৮টি এবং ১১১জন সদস্য ভোটদান থেকে বিরত ছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক প্রভাব অগ্রাহ্য করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে সারাবিশ্বে এই ব্যাপক জনমত গড়ে ওঠার মধ্য দিয়ে যে সম্ভাবনা দেখা দেয়, তা নস্যাৎ করতেই সিরিয়ায় বিদ্রোহ, আইএস’র উত্থান, গাজায় সামরিক আগ্রাসন, লিবিয়া, ইয়েমেনে বিদ্রোহসহ আরো অনেক কিছুই করা হয়। পক্ষান্তরে রাশিয়া, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্ত অবস্থানের মধ্য দিয়ে ইরানের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ৬ বিশ্বশক্তির পারমানবিক সমঝোতা চুক্তি ইসরাইলের যুদ্ধ পরিকল্পনার উত্তাপে পানি ঢেলে দিয়েছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প এসে তা ভন্ডুল করে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছিল। ইরানকে কোনঠাসা করে ফিলিস্তিন ইস্যুকে হীমঘরে আবদ্ধ করে ইসরাইলকে আরো শত বছরের জন্য অজেয় শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ডিল অফ দ্য সেঞ্চুরি ব্যর্থ হওয়ার পর ভূরাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ইরানের উত্থান পশ্চিমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত এক নতুন মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতাকে ক্রমেই সম্ভাবনাময় করে তুলেছে।

ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিয়ে অবৈধভাবে জায়নবাদী ইসরাইল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার দিনটি ছিল ১৯৪৮ সালের ১৫ মে। দিনটিকে নাকবা বিপর্যয়ের দিন হিসেবে স্মরণ করে ফিলিস্তিনি আরবরা। সাত দশক পেরিয়ে এসে বিগত দশকের শেষদিকে গাজায় দশকব্যাপী ইসরাইলি অবরোধ এবং জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের প্রতিবাদে ‘গ্রেট মার্চ টু রিটার্ন’ ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রনাধিকারের আন্দোলনে নতুন মাত্রা সংযুক্ত করেছিল। হাজার হাজার ফিলিস্তিনী ইসরাইল সীমান্তের কাছে তাবু গেঁেড় বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণের উপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ নিবদ্ধ হয়। তাদের সেই বিক্ষোভ ও দাবীর ন্যায্যতা বিশ্ববাসির কাছে আবারো প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসরাইলিদের অভিযোগ ছিল, এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজক ও পৃষ্ঠপোষক হামাস। তারা ফিলিস্তিনী বেসামরিক নাগরিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। নিজেদের সীমান্তে বিক্ষোভ সমাবেশ ও টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ ঠেকাতে ইসরাইলি সেনাবাহিনী তাদের স্নাইপার স্কোয়াড মোতায়েন করে। প্রতিদিন শত শত মানুষকে পাখির মত গুলি করলেও ফিলিস্তিনিরা পিছু হটেনি। দেড়মাসে দেড়শতাধিক মানুষকে হত্যা এবং ১২ হাজারের বেশি নারী, শিশু ও যুবককে আহত করার মধ্য দিয়ে বিশ্বের সামনে বর্বরতার আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল ইসরাইল। তবে হত্যাকাণ্ডের ভয় দেখিয়ে ফিলিস্তিনিদের আন্তনিয়ন্ত্রণের আন্দোলনকে গত ৭৫ বছরেও দমিয়ে রাখা যায়নি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের শক্তি ইসরাইলের সামরিক আধিপত্যের গর্বকে ম্লান করে দিয়েছে বার বার। এবারের হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ অতীতের যে কোনো কনফ্লিক্টের চেয়ে ভিন্ন ও ব্যতিক্রম। ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে পাথর-গুলতি নিয়ে প্রতিবাদ করতে করতে হামাস হেজবুল্লাহর মত অকুতোভয় মিলিশিয়া বাহিনী ক্রমেই দুর্দমনীয় হয়ে ওঠা ফিলিস্তিনিরা অপারেশন আল আকসা ফ্লাড শুরুর ৭ মাসের মাথায় জায়নবাদীদের চুড়ান্ত পরাজয়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এর আগের দেড় দশকে ফিলিস্তিন ও লেবাননের দুই প্রতিরোধ বাহিনীর কাছে অন্তত দুইবার গ্লানীকর পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছিল জায়নবাদী বাহিনী। শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সম্প্রসারণবাদী আগ্রাসী নীতির কারণে গত ৭৫ বছরেও ইসরাইল তার প্রতিবেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। নিরস্ত্র ফিলিস্তিনীদের উপর সর্বাত্মক অবরোধ ও বার বার সামরিক হামলা চালিয়েও তাদের প্রতিবাদের শক্তি নি:শেষ করতে পারেনি। বরং তাদের প্রতিবাদি চেতনা ও আত্মদানের শক্তি ইসরাইলের জায়নবাদি শক্তিকে রাজনৈতিক-কূটনৈতিকভাবে পরাস্ত করতে সক্ষম হয়েছে। উপরন্তু হামাস- হেজবুল্লাহর শক্তি ও সক্ষমতার ক্রমবৃদ্ধি এখন ইসরাইলের সামরিক শ্রেষ্ঠত্বের দাবিকে উপহাসে পরিনত করেছে। ইসরাইলের নিরাপত্তা ও সামরিক সমৃদ্ধির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর শত শত কোটি ডলার বরাদ্দ দিলেও উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিদের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা বিশ্ব, আরব প্রতিবেশিরা কিছুই করেনি। ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধি কর্মকান্ড বিশ্বসম্প্রদায় মেনে নিচ্ছেনা।ফিলিস্তিনের ভূমি দিবসের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ইসরাইলের স্নাইপার হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনির হতাহতের ঘটনায় সারাবিশ্ব বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। ফিলিস্তিনীদের নিরাপত্তার প্রশ্নে জাতিসংঘের প্রস্তাবের পক্ষে নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রায় সব সদস্যের সমর্থন পাওয়া গেলেও একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে বার বার তা ব্যর্থ হয়ে গেছে। ২০১৮ সালে কুয়েতের আনা প্রস্তাবের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের ১০ সদস্য রাষ্ট্র ভোট দিয়েছে ৪টি দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে এবং একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। গাজায় ইসরাইলের নিকৃষ্টতম গণহত্যার মধ্যে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন যখন একচেটিয়াভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে, তখন নিরাপত্তা পরিষদের এই ভোটাভুটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সভ্যতার সব মানদন্ডকে লজ্জাবনত করে দেয়। ইসরাইলী স্নাইপারদের শত শত ফিলিস্তিনীর মৃত্যু এবং ১২ হাজারের বেশী আহত হওয়ার পর বেসামরিক ফিলিস্তিনীদের রক্ষায় আন্তর্জাতিক উদ্যোগের প্রস্তাবকে জাতিসংঘের ইসরাইল বিরোধি ও পক্ষপাতমূলক অবস্থান বলে গলাবাজি করেছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি।
মার্কিনীদের অন্ধ ইসরাইল প্রেম দুইরাষ্ট্রকেন্দ্রিক সমাধানের সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করেছে। দুই রাষ্ট্রের সমাধান মেনে নিয়ে খোদ ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশনও ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছিল। গত দশকের শেষদিকে মাহমুদ আব্বাসের দল ইসরাইলের স্বীকৃতি স্থগিত ঘোষনা করেছিল। জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের মধ্য দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই রাষ্ট্রকেন্দ্রিক সমাধানের সার্বজনীন স্বীকৃত পথ স্থায়ীভাবে রুদ্ধ করে দেয়ার প্রাথমিক কাজটি সম্পন্ন করেছে। জেরুজালেমের উপর মুসলমানদের ঐতিহাসিক অধিকারের প্রশ্নটির সাথে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি, স্থিতিশীলতা বহুলাংশে নির্ভরশীল। এ ক্ষেত্রে বিশ্বসম্প্রদায়ের অবস্থান এখনো অটুট রয়েছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন শুধু ফিলিস্তিন সংকটকেই জটিল তোলেনি, মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র বদলের একমাত্র পন্থা হিসেবে ইসরাইলের নীলনকশা বাস্তবায়নে একটি বড় আকারের যুদ্ধবাদি নীতি গ্রহণ করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অপরিনামদর্শী সিদ্ধান্ত থেকে জো বাইডেন বেরিয়ে আসতে পারেননি। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তার যেকোনো সম্ভাবনাকে সমূলে ধ্বংস করতে সম্ভাব্য সবকিছুই তারা যৌথভাবেই করছে। ইরান, ইরাক, সিরিয়া, তুরস্ক, লেবানন, লিবিয়া ও আফগানিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যে জাতিগত সংঘাত, যুদ্ধ ও অস্থিতিশীলতার আগুন জ্বালিয়ে ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পুরনো কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। পশ্চিমা প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে ইরানের উত্থান এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বের দুইশ’ কোটি মুসলমান এবং বাকি দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষের সমর্থনপুষ্ট ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য আঞ্চলিক বিরোধ ভুলে মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশকে একটি একক ইসরাইলবিরোধী ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গড়ে তোলার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। এবারের নাকবা দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্বমুসলমানের মধ্যে এই প্রত্যাশা অনেক বেশি প্রোজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মার্কিন প্রেসক্রিপশন ছেড়ে নিজেদের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হলে বিশ্বের সব পরাশক্তি তাদেরকে সমীহ করতে বাধ্য হবে। ইরান বারবার আঞ্চলিক ঐক্য, শান্তি ও নিরাপত্তার উপর জোর দিলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জায়নবাদী ভূত সউদী আরব, আমিরাত, বাহরাইন, মিশর ও জর্ডানের মত দেশগুলোর শাসকদের মাথায় এখনো আছড় করে আছে। গত ১ এপ্রিলে সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলায় আইআরজিসির ৫ জন কমান্ডারসহ অন্তত ১১ জনের মৃত্যুর পর ইরান দীর্ঘদিন ধরে অনুসৃত ‘কৌশলগত ধৈর্য্যরে’ নীতি থেকে সরে এসে প্রথমবারের মত ১৪ এপ্রিল ইসরাইলে নজিরবিহীন ড্রোন ও মিসাইল হামলার মধ্য দিয়ে সারাবিশ্বের কাছে এক নতুন বার্তা দিতে সক্ষম হয়েছে। ইসরাইলের আয়রন ডোম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহারের মাধ্যমে একদিনে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার খরচ করেও ইরানের ৯টি হাইপারসনিক মিসাইলের একটিও প্রতিহত করতে পারেনি। ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বিমানঘাটি নাভাতিম এয়ারবেজ ইরানের হাইপারসনিক মিসাইলে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ইরানের সামরিক শ্রেষ্ঠত্বের আসনকে সুদৃঢ় করেছে। পক্ষান্তরে, এর পাল্টায় ১৮ এপ্রিল ইরানের ইসফাহান ও তাবরিজে ইসরাইলের ড্রোন হামলা ছিল খুবই দুর্বল ও অকার্যকর। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, ইসরাইলের ড্রোনগুলো শিশুদের খেলনার মত। ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মধ্য আকাশেই এগুলোকে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

মধ্য এপ্রিলে ইরান-ইসরাইলের পাল্টাপাল্টি ক্ষেপনাস্ত্র হামলার পর থেকে এ নিয়ে এখনো নানাভাবে বিচার-বিশ্লেষন চলছে। লন্ডনভিত্তিক দৈনিক টেলিগ্রাফের একটি মন্তব্য কলামের শিরোনাম ছিল, ‘ইসরায়েল হ্যাজ জাস্ট হ্যান্ডেড ইরান অ্যা মেজর ভিক্টরি’-ইসরায়েল ইরানের হাতে একটি বড় বিজয় তুলে দিল। দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরাইলের মিসাইল হামলার পর প্রথমবারের মত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারের চিরাচরিত বুলির কথা ভুলে গিয়ে ইসরাইলের পাল্টা হামলার ঘোষণাকে সমর্থন না করা এবং ইসরাইলের সাথে আক্রমণে যোগ না দেয়ার ঘোষণা দিয়ে নিজেদের গা বাঁচানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে। হামাসের দুর্বল রকেট নিক্ষেপের পাল্টায় ইসরাইলের নির্বিচার বিমান হামলা ও পাইকারি হত্যাকান্ডকেও যারা এতদিন ধরে ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার হিসেবে সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছিল, ইরানের শত শত ড্রোন, ক্রুজ ও হাইপারসনিক মিসাইলে ইসরাইল বিমানঘাটিসহ সামরিক স্থাপনাগুলো লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার পরও তারা খামোশ থাকার বয়ান দিয়েছে! একেই বলে ঠেলার নাম বাবাজি। ইসফাহানে ইরানের পারমানবিক প্রকল্পের উপর ইসরাইলের ক্রমবর্ধমান হুমকির প্রেক্ষাপটে এই প্রথম ইরান তার পারমানবিক কর্মসূচির ঘোষিত নীতি পরিবর্তনের কথাও বলতে শুরু করেছে। সম্প্রতি ইরানের সংস্কারপন্থী রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ ও সাংবাদিক সাইদ লায়লাজ তার দেশের ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষকে ইরানের পারমানবিক কর্মসূচি সম্পর্কে রাখঢাক না রেখে যথাশীঘ্র পারমানবিক বোমা বানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। সম্প্রতি মিডল-ইস্ট আইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ আহ্বান জানান। একজন ইসররাইলি সামরিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ইরানের হাতে চারটি পারমানবিক বোমা তৈরীর মত পর্যাপ্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। অন্যদিকে জাতিসংঘের পরমানু বিষয়ক পর্যবেক্ষক গ্রুপ আইএইএ’র প্রধান রাফায়েল মারিনো ডয়েচে ভেলেতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইরান মাত্র একসপ্তাহের মধ্যে পারমানবিক বোমা বানাতে সক্ষম। ইরানের পারমানবিক প্রকল্পে ইসরাইলি হামলার আশঙ্কাকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করেন তিনি। এসব তথ্য প্রকৃত অবস্থাকে নিশ্চিত না করলেও ইরানের কৌশলগত সামরিক সক্ষমতা মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বরাজনীতির একটি নিয়ামক শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটোসহ পুরো পশ্চিমাবিশ্ব শত শত বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েও ইউক্রেনের পরাজয় ঠেকাতে পারছেনা। রাশিয়ার সাথে ইরানের সামরিক ঐক্য এই বিজয় নিশ্চিত করেছে। ইরানের সাথে ইসরাইলের সংঘাত পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নেয়ার পর রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়ার সাথে চীনের কূটনৈতিক-সামরিক বোঝাপড়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। হামাসের সাথে ইসরাইলের বন্দি বিনিময় ও যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কথিত অগ্রগতির মধ্যেও যুদ্ধাপরাধের দায়ে গ্রেফতার আতঙ্কে নিপতিত নেতানিয়াহু আইডিএফকে রাফা দখলের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। বিশ্ব সম্প্রদায়ের আহ্বান উপেক্ষা করে স্বজন হারানো, বাস্তু হারানো লাখ লাখ ফিলিস্তিনির শেষ আশ্রয় ঘনবসতিপূর্ণ রাফায় গণহত্যা চালানোর মত নির্মম নির্বুদ্ধিতার মধ্য দিয়ে নেতানিয়াহু তার পরাজয়ের দিনক্ষণকে আরো প্রলম্বিত করতে চাচ্ছেন। বাহ্যত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চাচ্ছে। নেতানিয়াহু বন্দি বিনিময়ের মধ্য দিয়ে গাজা যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। অন্যদিকে হামাস গাজায় যুদ্ধ বন্ধের স্থায়ী সমাধান ছাড়া যুদ্ধবিরতি মেনে না নেয়ার পক্ষে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। যুদ্ধের ২০০দিন পূর্তি উপলক্ষে টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেয়া এক বিবৃতিতে হামাসের আল কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবায়দা বলেছিলেন, আমরা মাত্র ৬০ মিনিটেই যে ইসরাইলকে পরাজিত করেছিলাম, ২০০দিন পেরিয়ে এসে তারা বিজয়ের মিথ্যা দাবি করে ইমেজ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। আবু ওবায়দার বক্তব্যে ইসরাইলি দখলদার বাহিনী ও নেতানিয়াহু সরকারের সামরিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও মানবিক বিপর্যয়ের দিকগুলো উঠে এসেছে। এরপরও তারা রাফায় সবচেয়ে বড় গণহত্যার প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনের ৭৬তম নাকবা দিবসের আগে রাফায় আরেকটি সম্ভাব্য নাকবাকে চুড়ান্ত বিজয়ের ইন্তিফাদায় পরিনত করার সর্বাত্মক প্রস্তুতিও চলছে। হামাস, হিজবুল্লাহ, হুথি, ইসলামিক জিহাদ, ইরাকি রেসিস্ট্যান্স এবং ইরানের আইআরজিসির সমন্বিত পদক্ষেপে জায়নবাদী দখলদারিত্বের পতন ঘন্টা বেজে গেছে।

[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আগ্রহী কানাডা

বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আগ্রহী কানাডা

কুমিল্লায় ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় সাত জনের মৃত্যুদণ্ড, সাতজনের যাবজ্জীবন

কুমিল্লায় ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় সাত জনের মৃত্যুদণ্ড, সাতজনের যাবজ্জীবন

জাতীয় এসএমই মেলায় সোনালী ব্যাংকের অংশগ্রহণ

জাতীয় এসএমই মেলায় সোনালী ব্যাংকের অংশগ্রহণ

বঙ্গবন্ধু কন্যার লড়াইয়ের গল্প গোটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরাই হোক অঙ্গীকার : তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু কন্যার লড়াইয়ের গল্প গোটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরাই হোক অঙ্গীকার : তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ

এখন প্রতি সপ্তাহে ২৫০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত সেভিংস খোলা যাচ্ছে বিকাশ অ্যাপে

এখন প্রতি সপ্তাহে ২৫০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত সেভিংস খোলা যাচ্ছে বিকাশ অ্যাপে

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি’র কৃষি সহায়তা প্রকল্প

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি’র কৃষি সহায়তা প্রকল্প

কুমিল্লায় উপজেলা নির্বাচনে এমপির ভূমিকায় ভোটের পরিবেশ বিঘ্নিতের আশঙ্কা

কুমিল্লায় উপজেলা নির্বাচনে এমপির ভূমিকায় ভোটের পরিবেশ বিঘ্নিতের আশঙ্কা

শীঘ্রই বাজারে আসছে টেকনো ক্যামন ৩০ সিরিজের ফোন

শীঘ্রই বাজারে আসছে টেকনো ক্যামন ৩০ সিরিজের ফোন

মাঝে মাঝে তার নম্বর খোলা পাওয়া যাচ্ছে, মাঝে মাঝে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে : ডিবি প্রধান

মাঝে মাঝে তার নম্বর খোলা পাওয়া যাচ্ছে, মাঝে মাঝে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে : ডিবি প্রধান

এমপি আনোয়ারুল আজিমের ব্যবহৃত নম্বরটি খুলছেন আবার বন্ধ করছেন: ডিবি

এমপি আনোয়ারুল আজিমের ব্যবহৃত নম্বরটি খুলছেন আবার বন্ধ করছেন: ডিবি

লুটপাট করে গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে আ'লীগ: প্রিন্স

লুটপাট করে গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে আ'লীগ: প্রিন্স

অ্যাকাডেমিক ব্যাংকিং সেবা ‘প্রাইমঅ্যাকাডেমিয়া’ চালু করলো প্রাইম ব্যাংক পিএলসি

অ্যাকাডেমিক ব্যাংকিং সেবা ‘প্রাইমঅ্যাকাডেমিয়া’ চালু করলো প্রাইম ব্যাংক পিএলসি

বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএইর সভাপতি মামুন সম্পাদক মুহাম্মদ মোরশেদ

বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএইর সভাপতি মামুন সম্পাদক মুহাম্মদ মোরশেদ

পোশাকখাতের উন্নয়নে ইইউকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান বিজিএমইএর

পোশাকখাতের উন্নয়নে ইইউকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান বিজিএমইএর

দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও রিজার্ভ সংকট জাতির জন্য অশনি সংকেত: ১২ দলীয় জোট

দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও রিজার্ভ সংকট জাতির জন্য অশনি সংকেত: ১২ দলীয় জোট

সংকট গভীর হওয়ার আগেই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের স্থায়ী সমাধান জরুরি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সংকট গভীর হওয়ার আগেই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের স্থায়ী সমাধান জরুরি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত : চলছে অনুসন্ধান

ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত : চলছে অনুসন্ধান

পর্তুগাল বাংলা প্রেস ক্লাবে যুক্ত হলেন একদল নতুন সদস্য

পর্তুগাল বাংলা প্রেস ক্লাবে যুক্ত হলেন একদল নতুন সদস্য

কাল থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ

কাল থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ